শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৬ পূর্বাহ্ন
হেল্থ ভিশন: মানবদেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গটির নাম হলো চোখ। বিভিন্ন কারণে এ বিশেষ অঙ্গটি রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এমনকি নষ্টও হয়ে যেতে পারে। আর যারা সারাদিন- রাত কম্পিউটার-ল্যাপটপের সামনে বসে কাজ করেন অনবরত তারা নিশ্চই কেউ বলতে পারবেন না যে আপনার চোখে কোনো সমস্যা নেই।
কথায় আছে দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা দেই না। ঠিক তেমনি যখন চোখের কোনো সমস্যা থাকে না তখন চোখের যত্ন নেয়ার কথা চিন্তাও করেন না অনেকেই। কিন্তু সুস্থ দৃষ্টি শক্তি ছোট থেকে বয়স্ক সবার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।যখন কেউ দৃষ্টিশক্তির সমস্যায় ভোগেন তখন তার স্বাভাবিক কার্যক্রম ও জীবনযাপন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ছোটবেলা থেকেই আমরা এ কথা শুনে আসছি যে এটা না খেলে চোখে সমস্যা হবে, ওটা না খেলে চোখে দেখতে পাবোনা, চোখে চশমা লাগাতে হবে। একটু বড় না হতেই চোখে বিভিন্ন সংক্রমণ দেখা দেওয়া, দৃষ্টিশক্তি কমে চশমা লাগানো, ছানি পড়ার মতো সমস্যাগুলো বাড়তে থাকে আমাদের। আমরা অনেক জায়গায় শুনেছি যে চোখের সমস্যা থেকে বাঁচতে কী কী খাবার বেশি খেতে হবে, আজ আবার নতুন করে জানবো সেগুলো-
গাজর
ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে দারুণ কার্যকর। গাজরে ভিটামিন এ আছে প্রচুর পরিমাণে। তাই অধিক গুণসম্পন্ন এই গাজর খেতে পারেন যত খুশি। এতে করে চোখের সমস্যাগুলো কমবে, চোখের জ্যোতিও বাড়বে অনেক। গাজরে বেশকিছু উপকারি বিটা ক্যারোটিনও রয়েছে, যা চোখের জন্য অন্যতম টনিক।
ভূট্টা
ভুট্টায় প্রচুর পরিমাণে লুটেইন এবং জিয়াক্সেনথিন রয়েছে। এই উপাদান দুটি চোখের মঙ্গলের জন্য বন্ধুর মতো। ভুট্টার তৈরি যেকোনো খাবার সুস্বাদু তো বটেই, চোখের জন্য সরাসরি উপকারী। তাই বেশি করে ভুট্টা খেতে শুরু করুন। চোখের সমস্যা কমে যাবে।
মাছ
মাছ না হলে আমাদের বাঙালিদের যেন চলেই না। চোখের সুস্বাস্থ্যের জন্যে মাছের কোনো বিকল্প নেই, বিশেষ করে ছোট মাচ। সেই সঙ্গে ম্যাকারেল এবং টুনার মতো সামুদ্রিক মাছও খেতে হবে। সামুদ্রিক মাছে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড দৃষ্টিশক্তির উন্নতি করে। তাই নিয়মিত মাছ খান।
বিভিন্ন ধরনের লেবু
মৌসম্বি লেবু, কমলালেবু এবং পাতিলেবুতে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন থাকে। সেই সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে সাইট্রাস অ্যাসিড। এই লেবুগুলোতে থাকা প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি রয়েছে। এই ভিটামিন চোখের ছানি প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা নেয়। সেই সঙ্গে দৃষ্টিশক্তিরও উন্নতি ঘটায়।
দুগ্ধজাত খাদ্য
নিয়মিত দুধ এবং দইয়ের মতো দুগ্ধজাত খাবার খেলে শরীরে ভিটামিন এ এবং জিঙ্কের মাত্রা বাড়ে। এই উপাদানগুলো কর্নিয়ার ক্ষমতা বাড়ায়, ফলে দৃষ্টিশক্তির উন্নতি হয়। যাদের নিয়মিত টেলিভিশন, কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করতে হয়, তাদের জন্য দুগ্ধজাত খাদ্য বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
সবুজ শাক-সবজি
চোখের জন্য সবুজ শাক-সবজি যে অসামান্য সেটা তো কমবেশি সবাই জানে। কিন্তু আমরা তো সবুজ শাক-সবজির প্রতি অতিমাত্রায় উদাসীন। বাইরের অন্যান্য খাবার আর জমকালো খাবার ছাড়া আমাদের তো ভালোই লাগেনা। তাই ছোটবেলা থেকে সবাইকে সবুজ শাক-সবজি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। বিভিন্ন শাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং জিয়াক্সেনথিন উপকারি উপাদান থাকে, যা ছানি এবং আরও একাধিক চোখের রোগকে দূর রাখে।
ডিম
ডিম তো প্রায় প্রতিদিনই খেতে হয় আমাদের। তবে যারা ডিম খেতে অনীহা প্রকাশ করে, তাদের নিজের চোখ বাচাতে হলেও প্রতিদিন অন্তত একটি করে ডিম খেতে হবে। এতে করে শরীরে লুটেইন, জিয়াক্সেনথিন এবং জিঙ্কের পরিমাণ বাড়তে শুরু করে। ফলে চোখের শিক্তি বাড়তে থাকে।